নিজস্ব সংবাদদাতা: যখন নিজেদের প্রধান প্রতিপক্ষ এটিকের সঙ্গে মার্জ করে আইএসএলে নাম লিখিয়ে ফেলেছে, তখনও অন্ধকারে ছিল লাল-হলুদ। সেই দুঃসময়ে ক্লাবের পাশে এসে দাঁড়ায় শ্রী সিমেন্ট। ইনভেস্টর হয়ে দলকে আইএসএলে নথিভুক্ত করিয়ে মন জয় করে আপামর ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের। সেই ঘটনার এখনও এক বছরও হয়নি। এরই মধ্যে আবার বিচ্ছেদের কালো ছায়া গ্রাস করতে চলেছে ইস্টবেঙ্গলকে। সূত্রের খবর, আগামী মার্চ মাসেই লাল-হলুদকে বিচ্ছেদের নোটিস পাঠাচ্ছে এই ইনভেস্টর কোম্পানি শ্রী সিমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড। আপাতত শেষের পথে সপ্তম আইএসএল। অথচ দুই পক্ষের অনমনীয় মনোভাবের ফলে এখনও চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়নি। ফলে ক্লাবের বোর্ড গঠন থেকে মেমোরেন্ডাম তৈরি, সবটাই থমকে গিয়েছে।

ঘাড়ের ওপর ইন্ডিয়ান সুপার লিগ চলে আসায় তড়ি-ঘড়ি দল নামানোর তাড়াহুড়ো ছিল। এসসি ইস্টবেঙ্গল সেটা করেও ছিল। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, দুই পক্ষের বিভিন্ন ইস্যুতে টানাপোড়েন বেড়েছে। নবান্নে শ্রী সিমেন্ট ও ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের মৌখিক কথাবার্তা থমকে গিয়েছে মাঝপথেই। একে অন্যকে একাধিক মেল করে নিজেদের অবস্থান ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে ফেলেছে শ্রী সিমেন্ট ও ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। যার পর থেকে ক্রমশ জটিল থেকে জটিলতর হয়েছে সমস্যা। আর এত সমস্যার সমাধান সূত্র অধরাই রয়ে গিয়েছে।

তার ফলে বছর ঘোরার আগেই লাল-হলুদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে শ্রী সিমেন্ট। আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের এখনও দু’টো ম‍্যাচ খেলা বাকি। ২৩ ফেব্রুয়ারি ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ খালিদ জামিলের নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড। আর ২৭ ফেব্রুয়ারি ব্রাইট, মাঘোমারা মরশুমের সর্বশেষ খেলবেন উড়িষ্যা এফসির বিরুদ্ধে। এই মুহূর্তে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে ৯ নম্বরে রয়েছে লাল-হলুদ। তাই এই দুটো ম্যাচ জিতে একটা সম্মানজনক জায়গায় থাকতে চাইছে লাল-হলুদ।

চলতি মাসের ২৭ ফেব্রুয়ারি আইএসএলে এসসি ইস্টবেঙ্গলের শেষ ম্যাচ। ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত তাই অপেক্ষা করবে শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ। চলতি আইএসএলে ক্লাবের খেলা শেষ হলেই মার্চ মাসে ময়দানের লেসলি ক্লডিয়াস সরনীতে লাল-হলুদ ক্লাব তাঁবুতে তাঁরা বিচ্ছেদের চিঠি পাঠাবেন বলে জানা যাচ্ছে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সাবেকি কর্তারা মৌখিক কথাবার্তার কোনটাই পরবর্তীকালে রাখেননি বলেই অভিযোগ বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তা ব্যক্তিদের।

শ্রী সিমেন্ট কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভপ্রকাশ করে জানিয়েছেন, “আইএসএলে ক্লাব চালিয়ে তাঁদের প্রায় ৪০ কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ হয়েছে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের সাবেকি ক্লাব কর্তারা বিভিন্ন ইস্যুকে ঢাল করে যেভাবে চুক্তিপত্র সই করেননি, সেটা মেনে নেওয়া যায় না।” ঘনিষ্ঠ মহলে এই নিয়ে প্রচণ্ড বিরক্তি জানিয়েছে এসসি কর্তৃপক্ষ। আর সেই কারণেই লাল-হলুদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে শ্রী সিমেন্ট সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন দেখার ক্লাব এবং সমর্থকদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সাবেক কর্তারা কিছুটা নমনীয় হন কিনা। তাতে আখেরে ক্লাবেরই মঙ্গল!