নিজস্ব সংবাদদাতা- কয়লা পাচার কাণ্ডে হাইকোর্টে গিয়েও স্বস্তি মিলল না লালা ওরফে অনুপ মাঝির। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ আজ লালার জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয়। তবে হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে কিছুটা হলেও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির সব্যসাচী ভট্টাচার্য্য লালার জামিনের আর্জি খারিজ করে দেওয়ার পাশাপাশি জানিয়ে দেন কয়লা পাচারকান্ডের তদন্ত চালাতে গিয়ে ইসিএল এবং রেলের অন্তর্গত জমি বাদে বাকি সমস্ত জায়গায় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে সিবিআইকে। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যদি সিবিআইকে তদন্ত প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি না দেয় তবে কয়লা পাচার তদন্ত বেশ বড়সড় ধাক্কা খাবে।

মাসখানেক আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি নোটিফিকেশন জারি করে জানিয়ে দেয় সিবিআই সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে রাজ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া চালাতে হলে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে। কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, দেশের অনেক রাজ্যের সরকার‌ইএই ধরনের নির্দেশিকা জারি করেছে। এই বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যগুলির পক্ষেই রায় দেয়।

ঘটনা হল কয়লা পাচার কাণ্ডে লালার পাশাপাশি যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের নাম জড়িয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের তরফ থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ বিনয় মিশ্রের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। এই পরিস্থিতিতে লালা যদি হাইকোর্টের জামিন পেয়ে যেত তবে তৃণমূল নেতৃত্ব প্রকাশ্যে না হলেও ভেতর থেকে অন্তত খানিকটা হাফ ছেড়ে বাঁচত। কারণ তারা বারবার অভিযোগ করে আসছে বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআইকে ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

এদিকে কলকাতা হাইকোর্ট তদন্তের ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া বিপাকে পড়েছে সিবিআই এর আগে বেশ কিছু তদন্তের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার তাদের অনুমতি দেয়নি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য যদি শেষ পর্যন্ত অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তবে তদন্তপ্রক্রিয়া অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। এরইমধ্যে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে ভারতের পাশাপাশি বিনয় মিশ্রের কাছে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পাসপোর্ট আছে। সেই পাসপোর্ট ব্যবহার করেই তিনি এই মুহূর্তে বাংলাদেশ আত্মগোপন করে আছেন বলে খবর।