প্রথম দফা শেষ। এবার দ্বিতীয় দফা। খেলা শুরু। আর বাংলার আট দফার ভোটের দ্বিতীয়টাতেই এবারের নির্বাচনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ লুকিয়ে। ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে মুখোমুখি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও এক সময় তাঁর সেরা সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী। আর এই লড়াইয়ের জন্য আজ, রবিবার দোলের বিকেলে নন্দীগ্রামে পৌঁছে যাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ভোট পর্যন্ত নন্দীগ্রামেই থাকবেন মমতা। তবে বুধবার হুগলিতে একটি কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। তবে সেখানে তিনি যাবেন নন্দীগ্রাম থেকেই। একেবারে লাগাতার কর্মসূচি থাকছে মমতার নন্দীগ্রাম যাত্রায়। শোনা যাচ্ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও নন্দীগ্রামে আসছেন। প্রচারের শেষদিনে শুভেন্দুর হয়ে গলা ফাটাবেন শাহ।

আরও পড়ুন: প্রথম দফাতেই নারদ নারদ! গুচ্ছের অভিযোগ নিয়ে কমিশনে নালিশ তৃণমূল বিজেপির

প্রলয় দাসের অডিও টেপ কাণ্ডের পর মমতার সফর নিয়ে বাড়তি উৎসাহ সংবাদমাধ্যমে। যদিও অডিও টেপটির সত্যতা যাচাই করেনি বাংলা খবর।

গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর, ফের নিজের কেন্দ্রে ফিরছেন মমতা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ দুপুর দেড়টায় মমতা নন্দীগ্রামের পাশের কেন্দ্র চণ্ডীপুরে জনসভা করবেন। এখানে তৃণমূলের প্রার্থী অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী।

নন্দীগ্রামের অঙ্ক

২০১৯ লোকসভা নির্বাচন:
এই নির্বাচনে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে থাকা নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের লিড ছিল প্রায় ৬৮ হাজারের মত। মোট ভোটের ৬৩ শতাংশই ছিল তৃণমূল প্রার্থী দিবেন্দু অধিকারীর দখলে। সেখানে বিজেপি প্রার্থী এই বিধানসভা কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন, ৩০ শতাংশ ভোট পেয়ে, ৪.৫ শতাংশ ভোট পেয়ে সিপিএম প্রার্থী ছিলেন তিন নম্বরে। এবার তৃণমূলের সেই ভোটে অধিকারী পরিবারের একক প্রভাব কতটা ছিল সেটাই দেখার।

২০১৬ বিধানসভা নির্বাচন:
তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়ে শুভেন্দু অধিকারী জিতেছিলেন ৮১ হাজার ভোটের ব্যবধান। শুভেন্দুর বর্তমান দল বিজেপি সেই ভোটে তৃতীয় স্থানে ছিল মাত্র ১০,৭১৩ ভোট পেয়ে। বাম প্রার্থী সেই ভোটে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন ২৬ শতাংশের মত ভোট পেয়ে। যেখানে শুভেন্দু পেয়েছিলেন ৬৬.৮ শতাংশ ভোট।

২০১৪ লোকসভা নির্বাচন:
এই নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হিসেবে পুনর্নিবাচিত হয়েছিলেন। তমলুক লোকসভার অধীনে নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনে তৃণমূলের শুভেন্দু লিড নিয়েছিলেন ৮০ হাজারের মত ভোটের। শুভেন্দু এখানে ৬৮.৭৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। ২০০৯ লোকসভার থেকে ২০১৪ লোকসভা ভোটে এই আসনে তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়ানো শুভেন্দুর লিড বেড়েছিল।

২০১১ বিধানসভা নির্বাচন:
তৃণমূলের টিকিটে এই আসনে ফিরোজা বিবি জিতেছিলেন ৪২ হাজারের মত ভোটে।
হিসেব বলছে, নন্দীগ্রামে সাম্প্রতিককালে হওয়া ভোটে তৃণমূল বিপক্ষের চেয়ে গড়ে ৬০-৭০ হাজারের মত ভোট বেশি পায়। এবার সেই প্রাপ্ত ভোটে কতটা শুভেন্দু বা অধিকারী পরিবারের সেটা নিয়েই যত জল্পনা। আবার বামেদের ভোট যে গত বিধানসভা নির্বাচনের চেয়ে কমবেই সেটাও নিশ্চিত। বামেদের সেই ভোট দিদি না দিদি কার দিকে যায় সেটা দেখার।