আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বরাবরই দাপট দেখিয়েছে টীম ইন্ডিয়া . ১৯৮৩ সালে প্রথমবার কপিলদেব এর হাত ধরে আন্তর্জাতিক পালক মুকুটে যোগ হয়ে ভারতের . আর সেই টীম ইন্ডিয়ার প্রথম একাদশে নিজের নামটি দেখার জন্য সারাবছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান সারা ভারত এর অগণিত ক্রিকেটার .
দেশের প্রথম সারির ক্রিকেটের মধ্যে প্রধানত রঞ্জি ট্রফি থেকেই বেছে নেন নির্বাচকরা দেশের প্রথম সেরা একাদশকে . কিন্তু সেই সুযোগ অনেকেই পেয়েও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন না . তাই যোগ্যতা প্রমান এর লড়াই এ নিজেকে বারবারই প্রমান করতে হয়ে .
আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু ক্রিকেটারের নাম যারা দেশের জার্সি পড়ার সুযোগ পেয়েও সেই আসন ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন .


১. আকাশ চোপড়া ক্রিকেটার:
আকাশ চোপড়া খুবই পরিচিত নাম কিন্তু তাকে আমরা ধারাভাষ্যকর হিসাবেই বেশি চিনি . প্রথম সারির ১৬২ টি ম্যাচ খেলে ১০৮৩৯ রানের মালিকও তিনি . কিন্তু দেশের জার্সি গায়ে ওপেনার হিসাবে মাত্র ৪৩৭ রান তার ঝুলিতে ১৯টি ইনিংসের বিনিময় .


২. বিজয় দাহিয়া :
বিজয় দাহিয়া নামটি শুনলে প্রথমেই দিল্লির টিমের কোচের মুখটি ভেসে আসে . তিনিও কিন্তু দেশের জার্সি গায়ে খুব একটা ছাপ ফেলতে পারেননি . ১৬টি ইনিংস খেলে তার ঝুলিতে মাত্র ২১৬টি রান . যিনি নিজেকে উইকেট রক্ষক হিসাবেও মেলে ধরতে ব্যর্থ হন ক্রিকেটার .


৩. জয় প্রকাশ যাদব :
ভুপাল থেকে প্রথম কোনো ক্রিকেটার যিনি দেশের জার্সি গায়ে খেলার সুযোগ পান ২০০২ সালে . কিন্তু এই অল রাউন্ডারকে বেশিদিন না খেলেই বাদ পড়তে হয় ধারাবাহিকতার অভাবে . নির্বাচকরা তাকে আবার ২০০৫ সালে সুযোগ দেন কিন্তু এবারেও তিনি ব্যর্থ হন নিজেকে প্রমান করতে ক্রিকেটার . তার ঝুলিতে ব্যাটিং গড় ২০.২৫ এবং বোলিং গড় ৫৪.৩৩ .


৪. ভেনুগোপাল রায় :
এনাকে আমরা প্রথম ভারতীয় super sub হিসাবে চিনি. যিনি নিজেকে প্রতিশ্রুতিমান অল রাউন্ডার ক্রিকেটার হিসাবে প্রমান করেন ২০০৬ সালে . কিন্তু ১১ ইনিংস এ মাত্র ২১৮ রানের জন্য বাদ পড়তে হয়ে প্রথম একাদশ থেকে .


৫. রোহান গাভাস্কার :
প্রবাদ প্রতিম সুনীল গাভাস্কার এর পুত্র হিসাবেই যাকে আমরা বেশি চিনি কারণ পিতার নামের জন্য তার কাছে আমরা এক পাহাড় প্রমান প্রত্যাশা করেছিলাম ক্রিকেটার হিসাবে . কিন্তু দেশের জার্সি গায়ে তিনি সেই প্রত্যাশা পূরণ এ ব্যর্থ হন . ১০ টি ইনিংস খেলে মাত্র ১৫১ রানেই দুৰ্ভাগ্যবশত ইতি টানতে হয়ে তার ক্যরিয়ার এ .


৬. দীনেশ মোঙ্গিয়া:
এই নামটি শুনলেই মনে পরে যায় ২০০৩ সালের ওয়ার্ল্ড কাপ টিমের কথা . হঠাৎ vvs laxman এর জায়গায় ইন্ডিয়া টিমে নিয়ে আসা হয়ে তাকে . ঘরোয়া ক্রিকেট এ ভালো পারদর্শিতা দেখালেও দেশের হয়ে ৬ ইনিংসে মাত্র ১টো রানেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়ে তাকে . পরে তার টেকনিক নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়ে .


৭. সঞ্জয় বাঙ্গার:
যিনি আমাদের কাছে টীম কোহলির ব্যাটিং কোচ হিসাবে বেশি পরিচিত . তার খেলোয়াড়ী জীবন কিন্তু বেশি সুখকর নয়. অল রাউন্ডার ক্রিকেটার হিসাবে দেশের জার্সি পড়ার সুযোগ এলেও সেটিকে বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি . ১৩.৮৫ ব্যাটিং অ্যাভারেজ ও ৫৫.৪১ বোলিং অ্যাভারেজ এর সাথে ইতি টানতে হয়ে তার ক্রিকেটীয় জীবনের .


৮. অজয় রাত্রা:
এনার নামটি ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে উদীয়মান তরুণ উইকেট রক্ষক ক্রিকেটার যিনি টেস্ট এ শতরানের অধিকারী ছিলেন. কিন্তু দুৰ্ভাগ্যবশত ক্রমাগত চোট্ আঘাত তার দেশের জার্সি গায়ে বেশিদিন খেলার স্বপ্নকে ভেঙে দেয়. টেস্ট ক্রিকেট এ ১৮.১১ ও ODI তে ১২.৮৬ গড় এর সঙ্গে শেষ করতে হয়ে তাকে. যেটা পার্থিব ও ধোনি ক খুব সহজেই জায়গা ছেড়ে দেয় ইন্ডিয়া টিমের জন্য.


৯. রীতিন্দর সিং সোধি :
পাঞ্জাবের এই ক্রিকেটার u -19 ওয়ার্ল্ড কাপ এ ইন্ডিয়ার হয়ে খুব ভালো পারফর্মেন্স উপহার দেওয়ার পর সচিন তেন্ডুলকর এর সাথে উইকেট শেয়ার করার সুযোগ পান ক্রিকেটার. কিন্তু প্রবল প্রত্যাশার চাপ ধরে রাখতে না পেরে কেবলমাত্র ২৮০ রানের সাথেই শেষ করতে হয়ে তার দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন .


১০. সাইরাজ বাহুতুলে :
এই নামটি শুনলেই মনে পরে যায় বাংলা দলের কোচকে , যিনি ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন বাংলাকে সাফল্যের শিখরে . কিন্তু তার ব্যক্তিগত ক্রিকেটীয় জীবন অন্য কথাই বলে . অনিল কুম্বলে চোটের জন্য তার গায়ে চড়েছিল দেশের জার্সি কিন্তু বারবারই নিজেকে লেগ স্পিনার কাম অল রাউন্ডার ক্রিকেটার হিসাবে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন. বাধ্য হয়েই নির্বাচকরা তার দেশের হয়ে খেলতে ইতি টানেন .