নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা অতিমারী শুরু হওয়ার পর থেকে চিনের উপর বেজায় চটেছে বিশ্ব। ভাইরাসের উৎসস্থল হিসেবে চিনের দুর্নাম ছড়িয়েছে সেই প্রথম থেকেই। উহানের যে অখ্যাত গলি থেকে বছর খানেক আগে প্রথম খোঁজ মিলেছিল করোনার, তার নাম লেখা হয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়। বিভিন্ন দেশের মতোই করোনা টিকা বানিয়েছে চিনও। তবে টিকার ব্যাপারে একমাত্র নিজেদের সৃষ্টির উপরেই বিশ্বাস রাখছে বেজিং। সেই সুযোগে বিশ্ব রাজনীতিতে কূটনৈতিক চাল হিসেবেও এবার ব্যবহৃত হচ্ছে করোনা ভ্যাকসিন।

একমাত্র চিনা ভ্যাকসিন নিলে তবেই মিলবে সেদেশে যাওয়ার ছাড়পত্র, এমনটাই জানিয়েছে বেজিং। আমেরিকায় অবস্থিত চিনা দূতাবাসের তরফে বিবৃতি দিয়ে এই ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা টিকার ব্যাপারে অন্য কোনো দেশের উপর ভরসা করতে রাজি নয় চিন, তাঁদের বিবৃতি থেকেই পরিষ্কার হয়েছে সে কথা। বলা হয়েছে, চিনের ভিসা পেতে হলে নিতে হবে চিনের করোনা ভ্যাকসিনই। ভারত, আমেরিকা, ব্রিটেন বা অন্য যে কোনো দেশই হোক না কেন, সমস্ত বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রেই একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

বস্তুত, চিনে তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। করোনার বিভিন্ন প্রকার স্ট্রেনের খোঁজ মিলেছে বিভিন্ন দেশে। সেই সমস্ত রকমের স্ট্রেনের পক্ষেই কি উপযুক্ত চিনা ভ্যাকসিন? উঠেছে প্রশ্ন। এই চর্চার মাঝেই দূতাবাসের নয়া নির্দেশিকা নতুন করে শুরু করেছে বিতর্ক। করোনা আবহে চিনের বিভিন্ন নীতি নিয়ে যে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা শুরু হয়েছিল, তার মাঝে বেজিংয়ের এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ থেকে একথা পরিষ্কার হয়ে যায়, যে বিশ্ব রাজনীতিতে খানিক কর্তৃত্বের আসনে বসতে, নিজেদের ভ্যাকসিনকে গুরুত্ব দিতে এবং বাইরের দেশেও তা ছড়িয়ে দিতে বদ্ধপরিকর চিন।

প্রসঙ্গত, করোনা পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের পথে হেঁটেছে বিশ্ব। ভারত, আমেরিকা, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, ইটালি, শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি দেশের নাগরিকদের ফের চিনে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে বেজিং। সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে করোনা সংক্রমণ নতুন করে উদ্বেগ বাড়ানোর কারণেই ভিসা জারি করার ক্ষেত্রে নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে চিনা দূতাবাস। বিভিন্ন দেশে অবস্থিত দূতাবাস থেকেই চিনা ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, জানিয়েছে বেজিং। চলতি সপ্তাহ থেকে এই টিকাকরণের প্রক্রিয়া চালু হবে।