১৯৮২ সালের ২৫ শে নভেম্বর নদিয়ার চাকদায় জন্মগ্রহন করেছেন ঝুলন গোস্বামী। তিনি ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট জগতে অতি পরিচিত একজন।‌
আমরা আজ জেনে নেব তার সম্পর্কে দশটি অজানা তথ্য।

ক্রিকেট মহলে পা রাখার সিদ্ধান্ত

১৯৯৭ বিশ্বকাপের ফাইনালে ম্যাচ অষ্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড। সেই ম্যাচ কলকাতার ইডেন গার্ডেনে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। আজকের ঝুলন গোস্বামী ছিলেন সেই ম্যাচের বল বালিকা স্বেচ্ছাসেবক। ডেবি হেকি, বেলিন্ডা ক্লার্ক -এর মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিদের দেখার পর তিনি ক্রিকেটে তার ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

62822706
times of india


এম.এস‌‌. ধোনির কাছ থেকে পুরস্কারপ্রাপ্ত

২০০৭ সালের আইসিসি উইমেন্স ক্রিকেটার অফ দ্য ইয়ার পুরস্কারের বিজয়ী হিসেবে তিনি ক্রিকেট কিংবদন্তী এম.এস.ধোনির কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছিলেন।টেস্ট ও ওয়ানডে উভয় ম্যাচেই তিনি খুব কম বয়সে দুর্দান্ত বোলিং এর জন্য তিনি সুনাম অর্জন করেছিলেন।‌

ইংল্যান্ডে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে তার অবদান

২০০৬ সালে মহিলা দল ইংল্যান্ডে ভারতের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ে মূল খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। তিনি উভয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন এবং ইংরেজ মহিলা দলকে পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন। এটি ঝুলন গোস্বামীর একমাত্র দশ উইকেট।

দ্রুততম মহিলা বোলার

ক্যাথরিন ফিটজপ্যাট্রিকের পরে, ঝুলন বিশ্বের দ্রুততম মহিলা বোলার। 5’11 উচ্চতায়, তিনি নিয়মিত 120 কিলোমিটার বেগে বোলিং করতে পারেন।

বিপক্ষ দল ইংল্যান্ড তার লাকি চার্ম

তিনি ১১৭ ওয়ানডে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বাধিক উইকেট পেয়েছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঝুলন ওয়ানডে তে ১৮.৬৪ গড়ে ৬৩ উইকেট নিয়েছেন‌ এবং সীমিত ওভারের ফরম্যাটে তার সেরা পরিসংখ্যান একই দলের বিপক্ষে।

কেরিয়ার শুরুর লড়াই

অন্যান্য ভারতীয় বাবা-মায়ের মতো ঝুলনের বাবা-মাও চেয়েছিলেন যে তিনি ক্রিকেটের চেয়ে পড়াশোনায় বেশি মনোনিবেশ করুন। খানিক অবাধ্য হয়েই তিনি মাত্র ১৫ বছর বয়সে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন।লোকাল ট্রেন ধরে অনুশীলনে পৌঁছানোর জন্য তিনি সকাল সাড়ে চারটায় ঘুম থেকে উঠে, ৮০ কিলোমিটার পথ এসে তিনি অনুশীলন করতেন। অনেক সময় তিনি ট্রেন মিস হওয়ার জন্য অনুশীলন করতে পারেননি তবে তিনি হাল ছাড়েননি।

ZhozOHX6
twitter


পছন্দ

একটি সাক্ষাৎকারে ঝুলন তার অনেক প্রিয় জিনিস প্রকাশ করেছেন। পছন্দের খাবারের তালিকায় আছে চাইনিজ। তিনি চাইনিজদেরও পছন্দ করেন। প্রিয় অভিনেতা আমির খান আর প্রিয় অভিনেত্রী কাজল এবং প্রিয় ক্রীড়াবিদ ডিয়েগো ম্যারাডোনা। তার প্রিয় গন্তব্য লন্ডন। তিনি বই পড়তে খুব ভালোবাসেন, তাকে বইপ্রমী বলা চলে।

সেরা প্রশংসনীয় কথা

তার এক নিকটাত্মীয় তাকে বলেছিলেন ঝুলন একজন ভালো ক্রিকেটার তো বটেই তবে আরও বেশি একজন ভালো মানুষ। এই প্রশংসাটি তিনি তার জীবনের সেরা প্রশংসা হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

পুরষ্কার ও সম্মান

ঝুলন ক্রিকেটে তার অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ভারত সরকারের অর্জুন পুরষ্কার (২০১০) এবং পদ্মশ্রী (২০১২) সহ বেশ কয়েকটি অন্যান্য পুরষ্কার জিতেছেন। ২০১৭ সালে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ডি লিট সন্মান দিয়ে সন্মানিত করে প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক এবং বর্তমানে একদিনের ম্যাচে বিশ্বে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক ঝুলন গোস্বামীকে। বাংলা তো বটেই, ভারতে প্রথম কোনও মহিলা ক্রিকেটার এই ডি লিট সন্মান পেয়েছেন।

বায়োপিক

ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের দাপুটে ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামীর বায়োপিক তৈরি হতে চলেছে। বাংলার ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামীর জীবন তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছেন পরিচালক সুশান্ত দাস। সিনেমাটি হবে হিন্দিতে। সিনেমার নাম প্রাথমিকভাবে ‘চাকদা এক্সপ্রেস’ হবে বলে ঠিক হয়েছে।