নিজস্ব সংবাদদাতা: সম্প্রতি পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখাওয়া সরকারের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বেশ জল্পনা শুরু হয়। শোনা যায়, সেখানে অবস্থিত দিলীপ কুমার ও রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ি দু’টি কিনে তাকে মিউজিয়ামে পরিণত করা হবে। কিন্তু এর মাঝেই বেঁকে বসেছেন বাড়ির বর্তমান মালিকরা। সূত্রে খবর, দিলীপ কুমারের পৈতৃক বাড়ির বর্তমান মালিক এই সম্পত্তির জন্য ২৫ কোটি টাকা দাবি করেছেন। অন্য দিকে, রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ি বিক্রির জন্য সরকারের কাছে ২০০ কোটি টাকা দাবি করেছে বাড়ির বর্তমান মালিকপক্ষ।

ফলে পাকিস্তানে দিলীপ কুমার ও রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ির ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও জল্পনা জারি। তাই ভারতীয় সিনেমার এই জনপ্রিয় অভিনেতাদের পরিবারের সদস্যদের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হতে চলেছে। সরকারের তরফে এর আগে বাড়ি দুটির যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেই অনুযায়ী দিলীপ কুমারের পৈতৃক বাড়ির দাম ছিল ৮৬.৫ লক্ষ টাকা ও রাজ কাপুরের পৈতৃক বাড়ির দাম ছিল ১.৫০ কোটি টাকা। কিন্তু মালিকদের দাবি আকাশছোঁওয়া। আর এখানেই নতুন সমস্যার সূত্রপাত!

অভিনেতা দিলীপ কুমারের প্রায় ১০০ বছরের পুরোনো পৈতৃক বাড়ি অবস্থিত কিস্সা খোয়ানি বাজার এলাকায়। ২০১৪ সালে নওয়াজ সরিফের সরকারের আমলে সেই বাড়িকে ন্যাশনাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের দিকে, ২০০৫ সালে ৫১ লক্ষ টাকায় হাজি লাল মহম্মদ নামে এক ব্যক্তি বাড়িটি কিনে নেন। এরপরই এই বাড়িটি নিয়ে সরকার পক্ষের সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয়।

একই এলাকাতেই রাজ কাপুরের পৈতৃক ভিটেও রয়েছে। এই বাড়িটিকে কাপুর হাভেলি বলে ডাকা হয়। ১৯১৮-১৯২২ সালের মধ্যে এই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন রাজ কাপুরের দাদু দেওয়ান বশেশ্বরনাথ কাপুর। এখানেই জন্মেছিলেন রাজ কাপুর ও তাঁর কাকু ত্রিলোক কাপুর। পরের দিকে বাড়িটিকে ন্যাশনাল হেরিটেজ বলেও ঘোষণা করে দেওয়া হয়। তবে এই ঐতিহ্যশালী বাড়ির ভবিষ্যৎ-ও বেশ নড়বড়ে।

এ নিয়ে কাপুর হাভেলির বর্তমান মালিক আলি কাদের জানিয়েছেন, তিনি কখনও এই বাড়িটি ভাঙতে চাননি। এই ঐতিহাসিক বাড়ি সংরক্ষণের জন্য আর্কিওলজি বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু তেমন কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। যদিও প্রশাসনের তরফে অন্য তথ্য উঠে এসেছে।

পরে জানা যায়, বাড়িটির জন্য কেপি অর্থাৎ খাইবার-পাখতুনখাওয়া সরকারের কাছ থেকে ২০০ কোটি টাকা দাবি করেছেন আলি কাদের। এই বিষয়ে আর্কিওলজি বিভাগের প্রধান ড. আব্দুস সামাদ খান জানিয়েছেন, এর আগে বেশ কয়েকবার নানা কারণ দেখিয়ে ওই দু’টি বাড়ি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছিল মালিকপক্ষ। আসলে প্রাইম লোকেশনে কমার্সিয়াল বিল্ডিং গড়ার জন্যই বাড়িটি ভাঙতে চেয়েছিল তারা। তবে প্রতিবারই প্রশাসনের তরফে সেই কাজ সক্রিয় ভাবে বাধা দেওয়া হয়েছে।