পিরিয়ডস প্রত্যেকটি সুস্থ ও স্বাভাবিক নারীর জীবনে একটি অতি স্বাভাবিক বিষয় এবং নারী স্বাস্থ্যের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। মাসের এই কয়েকটা দিন সকল মহিলাকে এক বিশাল হ্যাপা পোহাতে হয়। অধিকাংশ মহিলাদের ক্ষেত্রে এই সময় নানান শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা যায়। ফলে মাসিকের ওই কটা দিন কাটে খুবই অস্বস্তিতে। এই সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে যেটা হয়ে থাকে, তা হল তলপেটের ব্যথা। তাছাড়া কোমরে ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা ইত্যাদি ও হয়ে থাকে। কিন্তু শুধু শারীরিক নয় মানসিক সমস্যাও বেশ ভালোরকম হয়ে থাকে এই দিনগুলিতে। পিরিয়ডের সময় মুড সুইং হওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার।
প্রতি মাসের নির্দিষ্ট এই সময়ে পিরিয়ডস হলে,
অস্বস্তি, ক্রোধ, বিরক্ত ও খিটখিটে মেজাজ থেকে শুরু করে মানসিকভাবে একদমই ভেঙে পড়ে মেয়েরা। এই লক্ষণগুলোকে একসঙ্গে বলা হয় প্রিমিন্সট্রুয়াল সিনড্রোম, বা পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগের সিন্ড্রোম। যা, সংক্ষেপে PMS নামে বেশি পরিচিত। এই সময় গুলিতে অল্প কিছু হলেই বিরক্ত হওয়া , রেগে যাওয়া কিংবা কষ্ট পেতে পারেন মেয়েরা। সাধারণত পেটে যন্ত্রণা কিংবা অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই মাসিক চলাকালীন হোমিওপ্যাথি অথবা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ কিনে খান। কিন্তু এই ওষুধগুলি সব সময় খাওয়া মোটেই শরীরের পক্ষে ভালো নয়। তার পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন কিছু ঘরোয়া টোটকা। আসুন তাহলে জেনে নেই তেমনি তিনটে ঘরোয়া টোটকা।
কাঁচা পেঁপে-
পিড়িয়ড চলাকালীন সময়ে কাঁচা পেঁপে খাওয়া খুবই উপকারী। কাঁচা পেঁপে কিন্তু ঋতুস্রাব নিয়মিত করতে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপে ভিটামিনের একটি ভাল উৎস কারণ ভিটামিন এ, সি, ই ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাসিয়াম প্রচুর পরিমাণে পেঁপেতে পাওয়া যায়। এমনকি এটি ইউরিনের সংক্রমণ বাড়তে দেয় না। বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যে ইউরিন সংক্রমণের ঝুঁকি দেখা যায়। তাই কাঁচা পেঁপে খেলে সেই সমস্যা থেকে খানিকটা মুক্তি পেতে পারেন। এবার প্রশ্ন হল খাবেন কী করে? তাহলে বলে রাখি, কাঁচা পেঁপে যেভাবে খুশি খেতে পারেন। সেদ্ধ করে খেতে পারেন, অথবা ঝোলেও রেঁধে খেতে পারেন। যদি একান্তই কাঁচা পেঁপে না খেতে পারেন, তা হলে কম পাকা পেঁপে একটু টক দই দিয়ে খেতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে একদম চিনি মেশাবেন না। প্রতিদিন বা এক দিন অন্তর একদিন অন্তর খেলে খুবই উপকারীতা পাবেন।
করলা-
এক চা চামচ মধু এবং একটি মাঝারি সাইজের করলা নিন। করলা ভালো করে ধুয়ে নিন, এর পর কেটে নিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস বের করে নিন। এবারে তাতে মধু মিশিয়ে গিলে ফেলুন। এই ভাবে একদিন অন্তর একদিন খেয়ে নিন।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে, নানা ধরনের ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা প্রদান করে। এনার্জি ও স্টেমিনা বাড়িয়ে তুলতেও করলা পাতার রস সাহায্য করে। কিভাবে খাবেন জেনে নিন এবার। একটি মাঝারি সাইজের করলা নিন। এবার করলা ভালো করে ধুয়ে নিন, এর পর কেটে নিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে জুস বের করে নিন। এবারে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে গিলে ফেলুন। এই ভাবে একদিন অন্তর একদিন খেয়ে নিন।এটি বেশ উপকার দেয়।
মৌরি-
পিরিয়ডের সময় হওয়া শারীরিক কষ্ট কমাতে মৌরি কিন্তু বেশ উপকারী । এমনকি, ঋতুস্রাব নিয়মিত করতে মৌরি খুব কাজে দেয়। সারা রাত এক গ্লাস জলে কাঁচা মৌরি ভিজিয়ে রেখে দিন। পরদিন সকালে খালি পেটে সেই জল ছেঁকে খেয়ে নিন।মৌরিতে এমন কিছু কম্পাউন্ড থাকে যা মাসিকের সময়ে তলপেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যতদিন না পিরিয়ডস হচ্ছে ততদিন খেয়ে যেতে হবে। এরম প্রতিদিন খেতে থাকলে ক্রমে মাসিকের সমস্যার সমাধান হবে।