**অতিমারী কেড়ে নিয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাপন, প্রতিনিয়তই বিঘ্নিত হচ্ছে রুজি-রোজগারের পথ। যানবাহন থেকে শুরু করে অফিসে উপস্থিতির হার,সবটাই আজ স্বাভাবিকতা হারিয়েছে। বিগত একবছরের ও বেশি সময় ধরে এক কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সকলে। তার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে জ্বালানির দাম। রান্নার গ্যাসের দামের পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে পেট্রোল ডিজেলের দাম।
গণপরিবহনের ঝামেলা এড়াতে অনেক মধ্যবিত্তই নতুন অথবা পুরোনো বাইক বা গাড়ি কিনতে বাধ্য হয়েছে কোনো মতে রোজ অফিস যাওয়াটুকু স্বাভাবিক রাখতে।কিন্তু পেট্রোল ডিজেলের আকাশ ছোঁয়া দাম ঘুম কেড়েছে সাধারণ মানুষের। দু’দিন একটু থমকে ছিল৷ আজ, বৃহস্পতিবার ফের বাড়ল জ্বালানির দাম৷ লিটারপ্রতি ৩৯ পয়সা বেড়ে আজ কলকাতায় পেট্রোলের দাম ১০১ টাকা ৭৪ পয়সা। বেড়েছে ডিজেলের দামও। লিটারপ্রতি ২১ পয়সা বেড়ে কলকাতায় ডিজেলের নতুন দাম হয়েছে ৯৩.০২ টাকা। সেঞ্চুরি অতিক্রম করেও থামছে না জ্বালানির দাম। লাগামছাড়া পেট্রোলের দামে মাথায় হাত মধ্যবিত্তের।এদিন রাজধানী দিল্লিতে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ৩৫ পয়সা বেড়ে হয়েছে ১০১.৫৪ টাকা৷ আর ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ৮৯.৮৭ টাকা৷
পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের পর থেকেই পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি আকাশছোঁয়া হয়েছে।দেশজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে মানুষের রোজগার কমেছে। অথচ পেট্রোল–ডিজেল নিয়ে কোনও ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকারের। সুতরাং দাম বেড়েই চলেছে।তথ্য বলছে, ৪ মে’র পর থেকে পেট্রোলে মোট ১১ টাকা ১৪ পয়সা বেড়েছে। আর ডিজেলে বেড়েছে ৯ টাকা ১৪ পয়সা। ইতিমধ্যেই দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা, চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরুতে পেট্রোল সেঞ্চুরি অতিক্রম করেছে। মুম্বইতে পেট্রোলের দাম লিটার প্রতি ১০৭.৫৪ টাকা এবং ডিজেল ৯৭.৪৫ টাকা৷ চেন্নাইতে পেট্রোলের লিটার প্রতি দাম ১০২.২৩ টাকা এবং ডিজেল ৯৪.৩৯ টাকা। রাজস্থানে পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ১১২ টাকা ৯০ পয়সাতে। আর ডিজেল ১০৩ টাকা ১৫ পয়সায়।
অনেকের মতে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের সাথে ভারতের অতিরিক্ত কর যুক্ত হয়েছে বলেই জ্বালানি তেলের দাম মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে। দেশের অন্যান্য রাজ্যেও বেড়ে গিয়েছে পেট্রো–ডিজেলের দাম। এই নিয়ে আন্দোলনে পথে নেমেছে বিরোধীরা।
এহেন পরিস্থিতিতে সকলেই আঙ্গুল তুলছে কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে।সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে অবগত হওয়ার পরেও কোনো মাথাব্যথা নেই মোদি সরকারের।অপরদিকে সকল অভিযোগকে পাত্তা না দিয়ে ক্রমেই বেড়ে চলেছে জ্বালানির দাম। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি আটকাতে সরকার তৎপর না হলে মধ্যবিত্তের জীবনযাপন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।অনেকের মতে সরকার ক্ষমতায় আসার পরে কেবল এক শ্রেণীর মানুষের কথা ভেবেই সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে,নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের কথা তাদের ভাবনার বিষয় নয়। এই অভিযোগ অবশ্য স্বীকার করতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার।কাজেই বিরোধীদের কাছে বিরাট অভিযোগের সুযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী দিনে কি আরও বৃদ্ধি পাবে জ্বালানির দাম? এই চিন্তায় মাথায় হাত মধ্যবিত্তের।