একুশের নির্বাচনী মহারণের আগে নেতাজি জয়ন্তীকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সাক্ষী থাকল বাংলা, তা সাম্প্রতিক ইতিহাসে নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন। কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও একাধিক আমলা মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে পালিত হয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। সরকারি এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের বহু নেতাদের মধ্যে হাজির ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও।


সাম্প্রতিক সময়ের বঙ্গ রাজনীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর গুরুত্ব যে কতখানি, এদিন নেতাজি জয়ন্তীর মঞ্চ থেকেও আরো একবার তার পরিচয় পাওয়া গেল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মাত্র ৪ মিনিটের কথোপকথনেই তিনি পেলেন গুরুত্বপূর্ণ দলীয় নির্দেশ। শুধু তাই নয়, তৃণমূল থেকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নন্দীগ্রামের এই নেতাকে এদিন প্রশংসাতেও ভরিয়ে দিলেন নরেন্দ্র মোদী।
বস্তুত, এদিন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের অনুষ্ঠানে বিজেপির অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। নিজের প্রাক্তন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেও দেখা যায় তাঁকে। বিজেপি সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এদিন অন্তত মিনিট চারেক কথা বলেন শুভেন্দু অধিকারী। ভিক্টোরিয়া চত্বরে প্রধানমন্ত্রীকে ঢুকতে দেখেই রীতিমতো ছুটে আসেন তিনি। প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রীর কার্যকলাপ সম্পর্কে যে প্রধানমন্ত্রীও যথেষ্ট ওয়াকিবহাল তা তাঁর আচরণ থেকেই স্পষ্ট হয়।


এদিন শুভেন্দু অধিকারীর কাজের জন্য প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। দলীয় এই নেতার উদ্দেশ্যে তিনি ভয় না পেয়ে, সবসময় সাহস রেখে কাজ করে যাওয়ার বার্তা দেন। এমনকি ভিক্টোরিয়ায় এদিনের অনুষ্ঠানের শেষেও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এক দফা আলাপচারিতা হয় প্রধানমন্ত্রীর।


দীর্ঘ জল্পনার পর গত ১৯ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মেদিনীপুরের সভা থেকে গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। দলবদলের পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুহুর্মুহু আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। কখনো মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাইপোর বিরুদ্ধে তুলেছেন তোলাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগ, কখনো বা ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে। তাঁর দলবদল যে শাসক দলকে রীতিমতো বিপর্যস্ত করেছে তাতে সন্দেহ নেই। আর সে কারণেই পদ্ম শিবিরে তাঁর গুরুত্ব হয়েছে আকাশছোঁয়া। সূত্রের খবর, শিগগিরই দিল্লি যেতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী।