কেন্দ্র সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তপ্ত দিল্লির পরিস্থিতি। ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল থেকে যে অশান্তির ছবি উঠে এসেছে তার বিরুদ্ধে গোটা দেশ জুড়েই উঠেছিল সমালোচনার ঝড়। কিন্তু দুঃসময়ে অন্নদাতা কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলে বিপাকে পড়তে হল বাম নেতা মহম্মদ সেলিমকে।
কৃষক আন্দোলনের সপক্ষে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটের সমালোচনা করার ফলে সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। সোমবার কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত মোট ২৫০টি ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যেই রয়েছে বামপন্থী নেতার অ্যাকাউন্টও।
মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর পর্যন্ত তাঁর অ্যাকাউন্ট সক্রিয় ছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট সংক্রান্ত তাঁর একটি ট্যুইটের পরেই ওই অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যায়। একে নতুন ধরণের ‘জরুরি অবস্থা’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “বাজেটের পর কৃষকদের নিয়ে আমি একটি টুইট করেছিলাম, তার পরেই দেখতে পাই আমার টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের বিপরীতে কাউকে কথা বলতে দেবে না। খোঁজ নিয়ে দেখলাম, যাঁরা কৃষক আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, আজ তাঁদের অনেকের অ্যাকাউন্টই বিনা নোটিসে বন্ধ করা হয়েছে। এটা একটা নতুন ধরনের জরুরি অবস্থা। আমাদের দাবি, নিঃশর্তে সমস্ত অ্যাকাউন্টের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলতে হবে।’’
এদেশে ট্যুইটার তথা সোশ্যাল মিডিয়ার উপর কেন্দ্র সরকার তথা বিজেপি যে কর্তৃত্ব বিস্তার করে, দীর্ঘদিন ধরেই সে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী নেতারা। এ প্রসঙ্গে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, “বিজেপি-র আইটি সেল টুইটারে ভুয়ো খবর ছড়ালেও, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশের পর বিজেপি-র আইটি সেলের পরিকল্পনায় দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সংগঠিত হয়েছিল তখন সবাই চুপ ছিল। আর এখন আমরা যখন কৃষক তথা দেশের মানুষের স্বার্থে সরব হলাম, আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল।” সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেই কি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিতে হবে তার মাশুল? এ ঘটনার পর আরো একবার উঠে গেছে সেই প্রশ্ন।