মন্দিরে দেবীমূর্তি থেকে গয়না চুরির ঘটনা দেশে বা রাজ্যে নতুন নয়। প্রায়শই এরকম খবর আমাদের সকলের চোখে পড়ে। রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে হামেশাই এমন কাজ করে দুর্বৃত্তরা। এবার তেমনই এক দুর্বৃত্তের দলকে রুখে দিলেন মন্দিরের পাশেই বসবাসকারী একটি পরিবার। সূত্রের খবর, তাঁদের বাড়ির সামনে কালী মন্দিরে হানা দিয়েছিল চোরের দল৷ কিন্তু মুসলিম ওই পরিবারের দুই সদস্যের সৌজন্যেই রোখা গেল চুরি৷ ধরা পড়ে গেল এক চোর৷ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর চব্বিশ পরগণার দেগঙ্গায়৷
এই ঘটনা এলাকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকেই ফের প্রতিষ্ঠিত করল বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা ব্লকের বেড়াচাঁপা-২ পঞ্চায়েতের গিলেবেড়িয়া প্রাচীন কালী মন্দিরে৷ জানা গিয়েছে, অন্ধকার থাকতেই কালী মন্দিরে হানা দেয় তিন দুষ্কৃতী৷ কালী প্রতিমার গায়ে থাকা লক্ষাধিক টাকার গয়না চুরি করাই ছিল তাদের লক্ষ্য৷ রাতে ফাঁকা মন্দির চত্ত্বরের সুযোগ নিয়ে দরজার তালা কাটতে শুরু করে তারা৷
মন্দিরের ঠিক উল্টোদিকের বাড়ির বাসিন্দা আব্দুল লতিব মণ্ডল ভোরের নমাজ আদায় করার জন্য সেই সময় বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন৷ তিনি ওই চোরেদের তালা কাটতে দেখেন৷ চুরির উদ্দেশ্যেই তিনজন জড়ো হয়েছে বুঝতে পেরে বাড়ি থেকে ছেলে রবিউলকে ডেকে আনেন আব্দুল লতিব৷ এর পর মোবাইলে তিন চোরের কীর্তির ভিডিও করার পাশাপাশি প্রতিবেশীদের খবর দেন তাঁরা৷ এলাকার মানুষ জড়ো হতেই বেগতিক বুঝে পালানোর চেষ্টা করে তিন চোর৷ দু’জন পালাতে সক্ষম হলেও জয় বোদে (১৯) নামে একজনকে ধরে ফেলেন তাঁরা৷ ধৃতকে বেঁধে রেখে মারধরও করা হয়৷ পরে দেগঙ্গা থানার পুলিশ এসে সেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে৷
চুরি আটকানোর জন্য আব্দুল লতিব এবং তাঁর ছেলেকে অশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন মন্দির কমিটির সদস্যরা৷ আর আব্দুল লতিব বলেন, “আমি যেমন নিজের ধর্মকে ভালোবাসি, তেমনই অন্যের ধর্মকেও সম্মান করি। তাঁদের ধর্মের উপর এভাবে আমার চোখের সামনে কেউ আঘাত হানছে দেখে চুপ থাকতে পারিনি। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও এই চুরি আটকানোর চেষ্টা করেছি। আমি খুশি যে একজন চোর অন্তত ধরা পড়েছে।”