করোনায় পাল্টে গেছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা

অন্যান্য সমস্ত বছরের মত এই ২০২০ বছরটা একেবারেই সুস্থ ও স্বাভাবিক নয়।

তাই ২০২০ সালটা মানব সভ্যতার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এ যেন বিশে বিষ।

করোনা ভাইরাস যা প্রথম দেখা যায় চীনের উহান শহরে। বিশ্বায়নের যুগে তা সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি।

আর এই পরিস্থিতিতে অচিরেই বদলে গেছে মানুষের জীবনযাত্রা।

প্রথমেই সাধারণ মানুষ পরিচিত হল কিছু নতুন শব্দের সাথে। যেমন- লকডাউন, সোশ্যাল ডিসট্যান্সি‌ং,কোয়ারেন্টাইন ইত্যাদি।

মানব জীবনের নিত্য সঙ্গী হয়ে উঠল মাস্ক,হ্যান্ড গ্লাভস,স্যানিটাইজার ইত্যাদি। দীর্ঘ বন্দী জীবন, মৃত্যু ভয়,স্বজন হারানোর ভয়,বন্ধ রোজগার,বেকারত্ব,

অনিশ্চিত জীবন বদলে দিল মানুষের জীবনদর্শনকে। কঠিন প্রশ্নের সম্মুখে দাঁড়াল মানুষের জীবন না জীবিকা?

3421
সৌজন্যে : tbs news

ভারতের মত বিশাল জনবহুল দেশে এই মারণ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করা অত্যন্ত কঠিন। এই ভাইরাসের প্রভাব ও ভয়াবহতা কতটা তা প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন

স্বাস্থ্য সংস্থা বা সরকারি ব্যবস্থায় প্রাপ্ত খবরের মধ্যে দিয়ে আমরা অবগত হচ্ছি। সেই প্রভাব নিয়েই গোটা বিশ্ব আজ উত্তাল।লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও

মৃতের সংখ্যা। যে দেশে শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব বিস্তর সেদেশে কেবল মৃত্যু ভয়ই পারে মানুষকে গৃহবন্দী করতে, বার বার হাত ধুতে,স্বাস্থ্য সচেতন হতে।

কিন্তু আজ মানুষ অনেক সচেতন, করোনা মহামারী বদলে দিয়েছে অনেক কিছুকেই। সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং দেখিয়ে দিল দূর থেকে কিভাবে ভাবের লেনদেন হয়,

গণপরিবহনের থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার আজ বেড়ে গিয়েছে বহুগুন, দোকানে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও যে জিনিস কেনা যাই। এই সবই মানুষের জীবনে

বহুদিন পর্যন্ত নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে থেকে যাবে , যত দিন না করোনা ভীতি দূর হচ্ছে। আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়েও মানুষ আজ সংগ্রামশীল।

তবে যে কোনো খারাপ জিনিসের পাশাপাশি অনেক ভালো জিনিস লুকিয়ে থাকে। এক্ষেত্রেও তা ব্যাতিক্রমী নয়। মানুষ আজ পরিবার ও আত্মিক সম্পর্কের

গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারছে। শুধু জীবিকার টানে যারা পরিবারের থেকে বিচ্যুত ছিলেন তারাও আজ পরিবারের টানে পাড়ি দিচ্ছেন হাজারো মাইল। বাড়িতে

বসেই মানুষ আজ শিখছে তাদের পছন্দ মতো জিনিস। মানুষ আজ বুঝতে পেরেছে শুধুমাত্র নিজে ভালো থাকলেই হবে না , আশেপাশে সমস্ত মানুষকেই ভালো

রাখতে হবে তবেই আমরা ভালো থাকতে পারবো। এই সমস্ত উপলব্ধিও আমাদের কাছে বড়ো পাওনা বলে মনে হয়। অসাম্য ,অনাহার ,দারিদ্র -অসহায়তা সমস্ত

কিছুকেই প্রত্যক্ষ করালো করোনা,যা দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রন করবে আমাদের। ধীরে ধীরে লকডাউন উঠে গিয়ে আনলক হচ্ছে সমস্ত কিছু ,

মানুষ ফিরছে নিউ নরমাল জীবনে করোনাকে সঙ্গী করে,ভীতিকে দূরে সরিয়ে রেখেই।