চুল নিয়ে চুলোচুলি করতে করতে ক্লান্ত?? রূপকথার গল্পের মেঘ বরণ নাই বা হোক, এক ঢাল ঘন চুল কে না চায়! অথচ, আমাদের চারিদিকে অসংখ্য মানুষ চুলের সমস্যায় জর্জরিত। চুল নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে এমন কিছু ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার আমরা করে ফেলি যে, তার জন্য আফশোস করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। তাহলে, চুল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়েই যাক। টাক পড়ার সমস্যা বহু খেত্রেই বংশগত হলেও ছোটবেলা থেকে কিছু সু অভ্যাস এই সমস্যা কে জটিল রূপ ধারণ করতে দেয়না।
চুল যেহেতু কেরাটিন নামক প্রোটিন দিয়ে তৈরি, সে ক্ষেত্রে চুলের বৃদ্ধি এবং মসৃণতা ইত্যাদির জন্য উচ্চ মানের প্রোটিনযুক্ত খাবার অতি প্রয়োজনীয়। মাছ, মুরগির মাংস, ডিম, চিনে বাদাম, আখরোট, ছানা, তিল, দুধ – এগুলি চুল কে মজবুত করতে ভীষণভাবে সাহায্য করে ।
তবে, বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাব হয়। চুলের অকালে ঝরে যাওয়ার সমস্যায় আশ্চর্য জাদুকরী সমাধান হল বায়োটিন। ভিটামিন এইচ বা বায়োটিন চুলের ভেংগে পড়া রোধ করে, চুলে অসামান্য উজ্জ্বলতা আনে। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বায়োটিন পাওয়া যায়। চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে এই ভিটামিন এর যথাযথ ব্যবহার চুলের স্বাস্থ্যে চমকপ্রদ পরিবর্তন আনতে সক্ষম ।
অতিরিক্ত চুল ঝরে যাওয়া বা টাক পড়ার সমস্যায় ভুগছেন যারা, তারা কখনই চুলের গোড়ায় এমন কোন উপাদান ব্যবহার করবেন না, যা চুলের গোড়া আরো দুর্বল করে তোলে। রঙিন শ্যাম্পু ব্যবহার না করে ভেষজ ও স্বচ্ছ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। ভেজা চুল কখনই আঁচড়াবেন না।যতটা সম্ভব, চুলের গোড়ায় ঘাম ও ময়লা বসতে দেবেন না। ভাজাভুজি খুব বেশি পরিমাণে খেতে থাকলে তা চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যাকে দ্বিগুণ করে তোলে। আর মাস দুয়েকের বেশি সময় ধরে চুল পড়ার সমস্যায় ভুগলে থাইরয়েড এবং রক্তাল্পতা সংক্রান্ত পরীক্ষা করান। দেরি না করে অবিলম্বে চিকিৎসক এর পরামর্শ নিন।
প্রচুর জল এবং ভিটামিন সি যুক্ত ফল খাওয়া চেষ্টা করুন। খাদ্য তালিকায় রাখুন লেবু, আংগুর, কিউই, জাম- যেগুলি তে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। সব্জি র মধ্যে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ,কুমড়ো চুলের পক্ষে খুবই উপকারী।
যাদের কম বয়সেই টাক পড়ার সমস্যা হচ্ছে, তারা মাথার তালুর ফাঁকা হয়ে যাওয়া অংশে আদার রস অথবা পানের রস ব্যবহার করতে পারেন।এর নিয়মিত ব্যবহার চুল ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
চুলের খুশকির প্রবণতা থাকলে আগে তার সমাধানের চেষ্টা করুন। নিম যুক্ত শ্যাম্পু এবং নিম তেল ব্যবহার করুন। তোয়ালে এবং চিরুনি রোজ সাবান জলে ধোয়ার অভ্যাস করতেই হবে।

খুবই সহজ এই নিয়ম গুলি মেনে চললেই চুলের সমস্যা আপনাকে কিছুতেই কাবু করতে পারবেনা। বরং, সুন্দর ঝলমলে চুলে আপনার ব্যক্তিত্ব অন্য মাত্রা পাবেই।