নিজস্ব সংবাদদাতা: বিজেপির রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হল সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত জেলা মুর্শিদাবাদে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করতেন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা হ‌ওয়ায় মুর্শিদাবাদে গেরুয়া শিবিরের কোনো ভবিষ্যত নেই। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে দেখা যায় তৃণমূলের বিকল্প হিসেবে বিরোধী পরিসরের অনেকটাই দখল করে নিতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। অনেকেই মনে করছেন এই জেলার হিন্দুরা বিজেপির পতাকাতলে ক্রমশ একজোট হয়ে উঠছে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পরিবর্তন যাত্রা নামক যে রথ যাত্রার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য বিজেপি তা নিয়েই এই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। বিজেপির মুর্শিদাবাদ জোনের রথটিকে নওদার কাছে আটকানো হয়। সেখানে ভারত সেবাশ্রম সংঘের যে কার্যালয়টি আছে সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় জেলা পুলিশ রথ আটকে দেয়। প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে এই আশঙ্কা করেই রথটি আটকানো হয়েছে।
বিজেপি প্রশাসনের এই দাবি উড়িয়ে জানায় জেলার কোন কোন অঞ্চল স্পর্শকাতর সেই সংক্রান্ত কোনো তালিকা তাদের দেওয়া হয়নি। এদিকে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের দাবি গত তিনদিন ধরে জেলার বিজেপি নেতৃত্বকে রথ যাত্রার রুট সম্বন্ধে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হলেও তা তারা কানে তোলেননি।
পরিবর্তন যাত্রা রথ আটকানো হলে বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা রাস্তায় বসে পড়েন। তাদের পথ অবরোধের ফলে এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। যদিও পরে জেলা পুলিশের নির্দেশ মতো রথযাত্রার পথ পরিবর্তন করার বিষয়ে রাজি হয়ে অবরোধ তুলে নেয় বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। আপাতত ঠিক হয়েছে বহরমপুর বাইপাস ধরেই পরিবর্তন যাত্রা রথ এগিয়ে যাবে।
এদিকে এই সপ্তাতেই মুর্শিদাবাদে কর্মীসভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। স্বাভাবিকভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল এবং বিজেপি কেউই কাউকে একফোঁটা জমি ছাড়তে রাজি নয়। রাজনৈতিক মহলের মতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে যে গুটি কয়েক জেলায় তৃণমূল ও বিজেপির পাশাপাশি তৃতীয় শক্তি হিসাবে বাম-কংগ্রেস জোট সমানতালে লড়াই করবে তার মধ্যে মুর্শিদাবাদ অন্যতম। এমনকি মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলার ফলাফল রাজ্যের মানুষকে চমকে দিতে পারে বলেও অনেকের ধারণা।