পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি বর্তমানে একটা “যদি” ওপর নির্ভর করে আবর্তিত হচ্ছে। সেই “যদি” টা হল যদি শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ে তাহলে কি হবে, বা যদি শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেয় তাহলে বিজেপি কতটা লাভবান হবে। শুভেন্দু বাবু এখনো পর্যন্ত তার অবস্থান নিয়ে বিন্দুমাত্র ইঙ্গিত দেননি, তবুও অনেকেই মনে করছেন তিনি হয়তো তৃণমূল ত্যাগ করে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পদ্ম শিবিরে নাম লেখাবেন ।আমরা বরং দেখেনিই শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে গেলে বিজেপির কি কি লাভ হতে পারে।

১) বিজেপি সমর্থকরা অনেক বেশি উজ্জীবিত হয়ে উঠবেন

শুভেন্দু অধিকারীর মতো একাধারে একজন জননেতা ও সংগঠক তাদের দলে যোগদান করলে এই রাজ্যের বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা অনেক বেশি উৎসাহিত হবে। এর ফলে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তারা সর্বস্ব দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াইয়ে সামিল হবে বলে ধরে নেওয়া যায়।

২) মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর সমস্যা মিটতে পারে

২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষ থেকে কাকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হবে সেই সমস্যার সমাধান এখনো পর্যন্ত হয়নি। এমনকি ভোটের আগে কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা না করলেও,যদি ভোটে তারা জয়লাভ করে সেক্ষেত্রে কে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারে তা নিয়েও খুব একটা সদুত্তর নেই বঙ্গ বিজেপির কাছে। বিরোধী রাজনৈতিক শিবির থেকে মাঝেমধ্যেই কটাক্ষ করে বলা হয় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার মতো কোনো যোগ্য মুখ‌ই নেই গেরুয়া শিবিরে। সেক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর মত একজন জননেতা তাদের দলে যোগ দিলে বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী করার মতো একজন উপযুক্ত মুখ পেয়ে যাবে।

৩) সাংগঠনিকভাবে দুর্বল এলাকাতেও ভালো ফল হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে

দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় সাংগঠনিকভাবে বিজেপি এখনো পর্যন্ত বেশ দুর্বল। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু তাদের দলে যোগ দিলে এই অঞ্চলগুলিতে বিজেপির তুলনায় ভালো ফল হবে বলেই মনে হয়।বিশেষ করে দুই মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ জেলায়গুলিতে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি বিশেষ না থাকলেও শুভেন্দু অধিকারীর ব্যক্তিগত সাংগঠনিক ভিত্তির উপর নির্ভর করে বেশকিছু আসন নিজেদের দিকে নিয়ে আসতে সক্ষম হতে পারে বিজেপি।

৪) তৃণমূল ভাঙছে এই বার্তা দেওয়া যাবে

শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন তৃণমূলের ভাষণ অনেক বেশি প্রকট হয়ে উঠবে। আর তা যদি ঘটে সে ক্ষেত্রে তৃণমূলকে আরো ভেঙে বিজেপির শক্তিশালী হয়ে ওঠাটা অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে।

৫) নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সুফল তারাও পাবে

নন্দীগ্রাম কৃষক আন্দোলনের মূল কান্ডারী শুভেন্দু অধিকারী যদি তাদের দলে যোগদান করে তাহলে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন শাসকদল বামফ্রন্ট বিরোধী কৃষক আন্দোলনের সুফল বিজেপিও লাভ করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সমাজের প্রান্তিক মানুষেরাও তাদের সমর্থন করতে এগিয়ে আসবে, যার ফায়দা বিধানসভা ভোটে বিজেপি অবশ্যই পাবে।

শুভেন্দু অধিকারী শেষ পর্যন্ত বিজেপিতে যাবে কিনা সেটা সময় সাপেক্ষ বিষয় হলেও, তার আগমন ঘটলে দিলীপ ঘোষেরা যে একাধিক ভাবে উপকৃত হবে তা চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়।