নিজস্ব সংবাদদাতা- বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন এক ঝাঁক প্রথম সারির তৃণমূল নেতা। সেই দলে সামিল হয়েছেন একদা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। যোগ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সবাই মোটামুটি সোনার বাংলা গড়ার কথা জানিয়েছেন। বাম শিবিরের পক্ষ থেকে অবশ্য গোটা বিষয়টিকে কটাক্ষ করে বলা হচ্ছে এক সময় মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সময় বাম ও কংগ্রেস নেতা কর্মীরা বলত তারা রাজ্য সরকারের নেতৃত্বে যে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ চলছে তাতে সামিল হতেই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। আর এখন তৃণমূল নেতারা সোনার বাংলার গড়ার লক্ষ্যে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন!

হুগলি জেলার উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বলেন, “তৃণমূল এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ ভুল পথে চলেছে। দলনেত্রীকে ভুল বোঝানো হচ্ছে। হুগলি জেলায় দলের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহর নেতৃত্বে সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে বিজেপিতে যোগ দেব বলে স্থির করেছি।”

হাওড়া জেলার বালির বহিস্কৃত তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া বলেন, “তৃণমূল চোর-ডাকাতে ভরে গিয়েছে। ভালো মানুষরা ওখানে থাকতে পারবে না‌। আমরা সবাই মিলে সোনার বাংলা গড়ে তুলব বলেই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি। আগামী দিনে তৃণমূল থেকে আরও অনেকেই বিজেপিতে যোগ দেবে বলে আমার বিশ্বাস।”

নদীয়া জেলার তৃণমূল নেতা পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের পরিবার সব সময় জনগণের সেবা করে এসেছে। আমার বাবা ছিলেন দুবারের বিধায়ক এবং কাকা পৌরসভার চেয়ারম্যান। আমি তাদের পথ অনুসরণ করে চলি। মানুষের সেবা করব বলেই বিজেপিতে যোগ দেয়ার বিষয়ে মনস্থির করি। তৃণমূল নেতৃত্ব চায়নি আমি দলে থাকি। সম্মান নিয়ে মানুষের কাজ করব বলে এবং সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যেই আজ বিজেপিতে যোগ দেব।”

আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পাঠানো চাটার্ড ফ্লাইটে করে দিল্লি উড়ে যাওয়া নেতাদের মধ্যে অবশ্যই সবচেয়ে হেভিওয়েট রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে আমাকে ফোন করে দিল্লিতে ডেকেছেন। তার মতো মানুষ ফোন করায় আমার মনে হয়েছে দিল্লি যাওয়া উচিত। রাজ্যে এর আগে যা উন্নয়নের কাজ হয়েছে হয়েছে, আমার লক্ষ্য বাংলার মানুষের জন্য কাজ করা। তার সঙ্গে কথা বলার সময় আমি পরিষ্কার করে আমার দাবিগুলি জানাব, সব‌ই বাংলার মানুষের উন্নয়নের জন্য। তিনি যদি তা মেনে নেন তাহলে আমি তৎক্ষণাৎ বিজেপিতে যোগ দেব। মানুষের জন্য কাজ করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।”

লক্ষণীয় বিষয় হল এক সময় তৃণমূলে যোগ দেবার আগে উন্নয়নকেই হাতিয়ার করেছিলেন অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময় সেই উন্নয়নের‌ই বুলি আওড়াচ্ছেন তারা। আগেরবার ছিল ‘উন্নয়ন যজ্ঞে সামিল’ হওয়া, সেটা একটু পরিবর্তিত হয়ে হয়েছে ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার বাক। সবটাই আসলে মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ!