নিজস্ব সংবাদদাতা- এতদিন ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি ছিল আগে আঘাত আসুক তবে প্রত্যাঘাত করা হবে। অর্থাৎ কোনো দেশ যদি আগে আঘাত না করে, তবে বিপদের গোয়েন্দা তথ্য থাকা সত্ত্বেও ভারত এতদিন সেই দেশের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সম্ভবত সেই নীতি পরিবর্তন করতে চলেছে ভারত। সম্ভবত বিপদ বুঝলে এবার আগে থেকেই আক্রমণের নীতি অনুসরণ করবে সেনাবাহিনী। রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের সহকারি প্রধান কে নাগরাজ নাইডুর কথা থেকে অন্তত এই বিষয়টি বোঝা গিয়েছে।

মেক্সিকোয় আয়োজিত নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলির বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন ‘আরিয়া ফর্মুলা’ বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করলেও এই ভারতীয় কূটনীতিক গোটা বৈঠকেই প্রতিবেশী দেশটিকে নিশানা করেন। এক্ষেত্রে তিনি মুম্বাই সিরিয়াল বোম ব্লাস্ট, ২৬/১১, পাঠানকোট, কাশ্মীর সন্ত্রাসবাদ সহ নানান উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, “সীমান্ত পারের তৃতীয় একটি দেশের মদতে ভারতে লাগাতার সন্ত্রাসবাদি আক্রমণ চলছে। আমরা এতদিন নিজেদের নীতির কারণে অনেক কিছু জেনেও আগাম আক্রমণ করিনি। কিন্তু এবার সময় এসেছে নিজেদের বাঁচাতে প্রথমেই আঘাত করার।”

প্রথমে আক্রমণ করার ক্ষেত্রে কে নাগরাজ নাইডু আমেরিকায় ৯/১১ সন্ত্রাসবাদি হামলার পর রাষ্ট্রসঙ্ঘে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরেন। সেই সময় রাষ্ট্রসঙ্ঘে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল আক্রান্ত হতে পারে এই রকম নিশ্চিত খবর থাকলে কোনো দেশ নিজেকে বাঁচাতে অন্য দেশের সন্ত্রাসবাদি ঘাঁটি বা লক্ষ্য বস্তুর ওপর আগাম আঘাত হানতে পারে। তাতে আন্তর্জাতিক আইন ও বিধি লঙ্ঘন করা হবে না।”

বিজেপি আমলে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সুর চড়িয়ে বলা হয়েছে বালাকোটের মতো পাকিস্তানের অন্তর্গত জায়গাগুলিতে সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরবর্তী সন্ত্রাসবাদি হামলার হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে আগাম পদক্ষেপ ছিল বলা যাবে না। কারণ এই ঘটনাগুলি কোন না কোনভাবে দেশ আক্রান্ত হ‌ওয়ার পর ঘটেছে। লক্ষ্য ছিল তৎক্ষণাৎ যেন আর হামলা চালিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বারাতে না পারে সন্ত্রাসবাদীরা। সেই লক্ষ্যেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়।

রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্থায়ী মিশনের সহকারি প্রধানের আজকের বক্তব্য যদি শেষ পর্যন্ত কার্যকরী হয় তবে আগামী দিনে দেশের সন্ত্রাসবাদি হামলা ঘটার আগেই পাকিস্তানের ওপর সার্জিকাল স্ট্রাইক চালানোর ঘটনা ঘটতে দেখা যেতে পারে।