নিজস্ব সংবাদদাতা: আদিবাসী গ্রামে গেলে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং চোখে পড়ার মতো বিষয় হল আদিবাসীদের দৈনন্দিন জীবন, তাদের সমাজ। আদিবাসী গ্রামের প্রত্যেকটা মাটির বাড়ি দেওয়ালে আদিবাসীদের বিভিন্ন শিল্প-সংস্কৃতির মূলক মাটির নানান শিল্পকলা ফুটে থাকে। দেওয়ালে দেওয়ালে নানারকম কারুকার্য, বিভিন্ন শিল্প ফুটিয়ে তোলা আদিবাসী সমাজের অন্যতম দর্শনীয় বিষয়। এবার সেই শিল্প, সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই রাজ্যের অন্যতম ভোট উৎসবের দেওয়াল লিখনে নিষেধাজ্ঞা জারি করল শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি অঞ্চলের প্রখ্যাত আদিবাসী গ্রাম বনেরপুকুরডাঙা।

রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত নির্ঘণ্ট ও প্রকাশ হওয়ার পরই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কায়দায় প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। এখন বাড়ি থেকে রাস্তায় বেরোলেই, দেওয়াল লিখনে চোখে পড়ছে ‘খেলা হবে’ অথবা পক্ষ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখনের কুৎসা। এই আবহে দেওয়াল লিখন বন্ধ করে দিয়ে নজির তৈরি করল শান্তিনিকেতনের আদিবাসী গ্রাম। সেখানকার গ্রামবাসীদের দাবি, উৎসবের প্রচার হোক বাড়ি বাড়ি মৌখিক ভাবে, কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দেওয়াল লিখন প্রচার সেই গ্রামের ভিতর বন্ধ হোক।

শান্তিনিকেতনে সোনাঝুরি অঞ্চলের ছোট্ট একটি আদিবাসী গ্রাম এই বনেরপুকুরডাঙা। এই আদিবাসী গ্রামে ছোট বড় পরিবার নিয়ে প্রায় ২৫০টি পরিবার একসঙ্গে বসবাস করেন। সোনাঝুরির কাছে হওয়ায় অসংখ্য ছবির শুটিংও হয়েছে এই গ্রামে। এমনকি শান্তিনিকেতনে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এই আদিবাসী গ্রামের মানুষদের দাবি, ভোট উৎসব হোক। এই ভোট উৎসবে শামিল তারাও। তবে দেওয়াল লিখন চাইছেন না তাঁরা। এক গ্রামবাসী বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলি প্রচার করতে আসুক। প্রত্যেকটি বাড়ি বাড়ি যাক। গ্রামবাসীদের সঙ্গে জনসংযোগ করুক। তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু আপত্তির জায়গা একটাই। আদিবাসী গ্রামের, আদিবাসী মানুষদের শিল্পসত্তা বেঁচে থাকুক। আর তাই সেখানে রাজনীতির চড়া রং দেওয়াল দখল করুক তা একেবারেই চাইছেন না তাঁরা।