নিজস্ব সংবাদদাতা: হাওয়ায় ভাসছে বসন্তের রং। পশ্চিমবঙ্গের আকাশে বাতাসে অবশ্য বসন্তের আঁচ বোঝার উপায় নেই। ভোটের উত্তাপে এখানে ভরা বসন্তেও ঘাম ঝরছে মানুষের। রাজনৈতিক আক্রমণ প্রতি-আক্রমণের এই খেলার মাঝে চারিদিকে যখন ক্রমেই চড়ছে উত্তেজনার পারদ, তখন কিন্তু মন ভালো নেই রঙের কারিগরদের। করোনা অতিমারীর দীর্ঘ বিপর্যয় ছায়া ফেলেছে তাঁদের রুজিরুটিতে। কাজ না থাকায় এখন তাঁদের কার্যত পেট চালানোই দায়।
বসন্ত হোক বা না হোক, ভোটের হাওয়া গায়ে লাগলেই মুখে হাসি ফোটে আবির কারিগরদের। কারখানায় দেদার তৈরি হয় আবির। রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের লাল সবুজ গেরুয়া আবিরের খেলায় যাতে বাঁধা না পড়ে, তাই দিনরাত আপন স্ফূর্তিতে কারখানায় কাজ করেন শ্রমিকরা। তবে এবছর শিলিগুড়িতে আবির শ্রমিকদের সেই চেনা উন্মাদনা উধাও। রং তৈরির মানুষগুলোর জীবনই সেখানে হয়ে পড়েছে বেরঙিন।
শিলিগুড়ির ভারত-বাংলা সীমান্তে অবস্থিত আবির কারখানায় এবার আর তৈরি হচ্ছে না বিভিন্ন দলের প্রতীকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লাল-সবুজ-গেরুয়া আবির। কারণ আর কিছুই নয়, করোনা সংক্রমণ। সম্প্রতি ভারতের নানা প্রান্তেই নতুন করে বেড়ে গেছে করোনার সংক্রমণ। আজ প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল বৈঠকেও ছিল উদ্বেগের বার্তা। সংক্রমণের এই আবহে কি প্রতিবারের মতো আবীর খেলায় মাতবেন রাজনৈতিক সমর্থকরা? হয়তো না! আর সেই আশঙ্কাতেই আগে থেকে আর আবির তৈরি করছেন না এই কারখানার কর্মচারীরা। মন খারাপ তাঁদের।
শোনা যাচ্ছে গত বছরের বেঁচে যাওয়া আবির দিয়েই এবারের ভোট পরবর্তী সময়ের চাহিদা মেটাবেন শ্রমিকরা। কারখানার মালিকের দাবি, করোনার আবহে এ বছরে আবিরের চাহিদা নেই। তাই আর আলাদা করে ঝুঁকি নিতে চান না তিনি। প্রতিবছর শিলিগুড়ির আবির কারখানা থেকে ৪-৫ টন আবির তৈরি করে পাঠান কারখানার শ্রমিকরা। অন্তত ১২ জন শ্রমিকের রোজগার এর উপরেই নির্ভর করে। করোনার ভ্রুকুটি এবার রং বানানোর সেই মানুষ গুলোর মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে।