নিজস্ব সংবাদদাতা: গত সপ্তাহেরই ঘটনা। জোটের শর্ত ভঙ্গ করে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া বিধানসভা কেন্দ্রে সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত সিপিএম-কংগ্রেস দুই শিবিরের প্রার্থীই সেখানে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। গত ২ এপ্রিল কংগ্রেস ও সিপিএমের দুই প্রার্থীই মহকুমা শাসকের দফতরে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা করায় তা নিয়ে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছিল। কারণ, মোর্চার তরফে এই কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী দাঁড়াবেন বলেই আগে ঠিক হয়েছিল। এমনকি কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী প্রবীর গঙ্গোপাধ্যায়ের নামও ঘোষণা করা হয়।

তারপরেও সিপিএম প্রার্থী সুদীপ্ত বাগচী নমিনেশন দেওয়ায় সংযুক্ত মোর্চার জোট নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। আর এবার উত্তরবঙ্গের মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরেও একই জটে ভুগছে সংযুক্ত মোর্চার জোট। কংগ্রেসের পর এই বিধানসভা আসন থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী রফিকুল আলম। তাঁর অভিযোগ, জোটের নামে ফরওয়ার্ড ব্লক টাকে মালদহ থেকে তুলে দেবো সেটা হয় না।

রাজ্যজুড়ে যখন বাম,কংগ্রেস ও আইএসএফ এর যৌথ সমঝোতায় সংযুক্ত মোর্চা গঠন করে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইয়ে শুরু হয়েছে, তখন উল্টো দিকে ভিন্ন পরিস্থিতি মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। সেখানে সংযুক্ত মোর্চার বিরুদ্ধে ফরওয়ার্ড ব্লকের পক্ষ থেকে রফিকুল আলমকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছে। আর এই নিয়েই সংযুক্ত মোর্চার অপর দুই শরিক সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্রে এবারে কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন মোস্তাক আলম। তিনি এই কেন্দ্রের গতবারের বিধায়ক।

ফরওয়ার্ড ব্লক মালদহ জেলা সাধারণ সম্পাদক সীমন্ত মিত্র বলেন, এভাবে জোটের নামে এতদিনের দলটাকে জেলা থেকে তুলে দেবো, তা কখনোই হয় না। ২০১৬ সালের বিধানসভার নির্বাচনে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের নামে কংগ্রেস প্রার্থী দিয়েছিল। তাহলে ২০২১ সালেও সেটা নয় কেন! অথচ এই বিধানসভা কেন্দ্রটি একসময় ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত ছিল। এখান থেকে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তৎকালীন তাজমুল হোসেন। কিন্তু তারপরে জোটের নামে এখন ফরওয়ার্ড ব্লককে পিছনের সারিতে রাখা হচ্ছে। সেটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই এবারে এই কেন্দ্রে আমরা প্রার্থী দিয়েছি।

এদিকে, মালদহ জেলার সিপিএম সাধারণ সম্পাদক অম্বর মিত্র এই বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুরের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মোস্তাক আলম। সংযুক্ত মোর্চা তার হয়ে কাজ করবে। এখন সংযুক্ত মোর্চার বিরুদ্ধে আর কে প্রার্থী দিল, সে ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। এতে আমাদের কোনও ক্ষতিও হবে না। জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি কালীসাধন রায় অবশ্য এই বিষয়ে বলেন, বিশ্বাসভঙ্গের দায় ফরওয়ার্ড ব্লককে নিতেই হবে। ২০১৬ সালে হরিশচন্দ্রপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। তাই এবারও ওই কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী দাঁড়িয়েছে। আমরা ফরওয়ার্ড ব্লক-কে অনুরোধ করব, যেন তাদের তরফ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়।