নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার সেকেন্ড ওয়েভের জেরে দেশজুড়ে ক্রমশ লম্বা হচ্ছে মৃত্যু মিছিল। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। আর হাসপাতাল গুলিতে দেখা দিচ্ছে অক্সিজেনের মারাত্মক আকাল। এই অবস্থায় গতকালই কেন্দ্রকে রীতিমত তুলোধনা করেছে দিল্লী হাইকোর্ট। হাইকোর্ট মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছে, “অক্সিজেনের জোগান বৃদ্ধির জন্য আপনারা সবদিক খতিয়ে দেখছেন না। ভিক্ষা করুন, ধার নিন বা চুরি করুন।” কেন এরকম জরুরি পরিস্থিতিতেও মোদী সরকারের ঘুম ভাঙছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

একইসঙ্গে হাইকোর্টের সতর্কতা, হাসপাতালে যদি অক্সিজেনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে যাবতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। করোনা মোকাবিলায় যদি সঠিক জায়গায় ওষুধ ও অক্সিজেন বা চিকিৎসার অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো না যায়, তবে তা মানুষ খুনের সমান। উল্লেখ্য, দিল্লী সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে এমনই মন্তব্য করেছে হাইকোর্ট। কেজরিওয়াল সরকার অভিযোগ করেছিল, কোভিড মোকাবিলায় অক্সিজেন ও টিকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য করছে কেন্দ্র। এই নিয়ে বুধবারই সাংবাদিক সম্মেলন করে কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

কেন্দ্রের দাবি সত্ত্বেও দিল্লীর কিছু হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের অভাবে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেখানকার একাধিক সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে অক্সিজেনের মজুত ছিল মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য আবার অনেক হাসপাতালে তা শেষ হয়ে গিয়েছিল। দিল্লীর স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন ট্যুইটারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূশ গোয়েলের কাছে আবেদন করেন উত্তরপ্রদেশের প্ল্যান্ট থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য। সঠিক সময়ে অক্সিজেনের সিলিন্ডার ভর্তি হলে তা বড়সড় সমস্যার হাত থেকে রক্ষা করবে। যদিও অক্সিজেন সরবরাহের পরও হাসপাতালগুলি সঙ্কট থেকে মুক্তি পাবে না।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যেতেই দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল হাতজোড় করে কেন্দ্রের কাছে দিল্লীর জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করার আর্জি জানান। অন্যদিকে উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়াও কেন্দ্রের কাছে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ানোর আবেদন করেছেন। তাঁর দাবি, দিল্লীতে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ১৮ হাজার করোনা রোগী ভর্তি আছে। দিল্লী ছাড়াও পার্শ্ববর্তী উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানার বহু মানুষেরও চিকিৎসা চলছে। এর মাঝেই অক্সিজেন নিয়ে দিল্লী-হরিয়ানার দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছে।