নিজস্ব সংবাদদাতা- বাম যুব কর্মীর মৃত দেহের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর তা নিয়ে নতুন করে চাপানউতোর তৈরি হল। প্রাথমিক ময়নাতদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে মৃত মইদুল ইসলাম মিদ্যা’র ( আগে নাম বলা হচ্ছিল ম‌ইদুল আলি মিদ্যা) মৃতদেহে কোনো অভ্যন্তরীন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে তার হাঁটুতে একটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে ময়নাতদন্তের যে রিপোর্ট আপাতত জানতে পারা যাচ্ছে তা যদি সত্যি হয় তবে অন্য কোনো কারণে মইদুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে, পুলিশের মারে তার মৃত্যু হয়নি। যদিও বামেদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে পুলিশকে বাঁচাতে মিথ্যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।

শাসকদল ঘনিষ্ঠ একাধিক জন ইঙ্গিত করছেন প্রথম দিন অর্থাৎ ১১ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত মইদুল ইসলামের চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি হওয়ায় সম্ভবত তার মৃত্যু হতে পারে। এমনকি পায়ের আঘাতটি পুলিশের লাঠির নাকি তিনি পড়ে যাবার সময় আঘাত পেয়েছিলেন সেটিও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সরকারপক্ষ যখন পুলিশের মারে মৃত্যুর ঘটনাটি উড়িয়ে দেওয়ার দিকে এগোচ্ছে সেই সময় ম‌ইদুলের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা সিপিএম নেতা ডাক্তার ফুয়াদ হালিম জানান পুলিশের মারে এই বাম যুব কর্মীর মাসল আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তার ফলে সেখান থেকে নানা ধরনের ক্ষতিকারক প্রোটিন বেরিয়ে কিডনিতে প্রভাব ফেলে। কিডনি বিকল হয়ে পড়ায় তার বুকে জল জমতে শুরু করে। অ্যাবডোমাইলোসিস হওয়ার ফলে ১৪ তারিখ থেকেই তার শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি ঘটতে শুরু করে। আজ সকালে শেষ পর্যন্ত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।

ইতিমধ্যেই মইদুল ইসলাম মিদ্যার মৃতদেহ পুলিশ মর্গ থেকে ছাড়া হয়েছে। মৌলালির ডিওয়াইএফআই রাজ্য সদরদপ্তর দীনেশ মজুমদার ভবনে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। ময়নাতদন্তে দেরি হওয়ায় মৃতদেহ নিয়ে শহরে মিছিল করার যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল তা শেষ পর্যন্ত বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে বাম নেতৃত্বে। ডিওয়াইএফআই সদর দপ্তর থেকে সোজা বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে মইদুল ইসলাম মিদ্যার দেহ।

মঈদুলের ভাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাদের যাবতীয় অভিযোগ পুলিশের দিকে। তারা চান দাদার মৃত্যুর ঘটনা সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে শাস্তি দেওয়া হোক। তারা অবশ্য তৃণমূলকে আলাদা করে দায়ী করতে চাননি।