নিজস্ব সংবাদদাতা- উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জের সভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বেশ কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করলেন আজ। বিজেপির স্থানীয় নেতাদের দুর্নীতি প্রসঙ্গ তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, “আগে একটা বিড়ি নিয়ে তিনবার টানত, কিন্তু এখন তাদের দম্ভে পা মাটিতে পড়ে না।” এর পাশাপাশি দলত্যাগী নেতাদের সম্বন্ধে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

“রামছাগলের ছানাগুলো দল ছেড়ে পালিয়েছে, বাঁচা গিয়েছে”, দলত্যাগী শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে রামছাগলের ছানা বলে উল্লেখ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্তত বিজেপির পক্ষ থেকে এরকম‌ই অভিযোগ করা হয়েছে। তারা তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে অশ্লীল ও আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ এনেছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী আজ এখানেই থেমে যাননি। তিনি অভিযোগ করেন অর্থের অহংকার বিজেপি ধরাকে সরা জ্ঞান করেছে, মানুষকে মানুষ বলে মনে করছে না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, “বিজেপির টাকা আছে বলে অহঙ্কার করছে। কিন্তু টাকার থেকে মানবাধিকারের দাম অনেক বেশি, মানুষের দাম অনেক বেশি টাকার থেকে।” এই বাংলা যে সহজ ঠাঁই নয় তা আজকের বক্তৃতায় পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিজেপি নেতারা সব বাইরে থেকে এসেছে। তাদের বাংলার সংস্কৃতি নিয়ে কোনো জ্ঞান নেই। এটা দিল্লিকা লাড্ডু নয়, রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের বাংলা। একে জয় করা অত সহজ নয়।”

মুখ্যমন্ত্রী আজ রায়গঞ্জের দলীয় জনসভার মঞ্চ থেকেই রাজবংশীদের জন্য নতুন ২০০ টি স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করেন। এর পাশাপাশি তিনি দাবি করেন উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জনজাতির জন্য তার নেতৃত্বাধীন সরকার কাজ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত দলীয় কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, “সব আস্তে আস্তে হয়ে যাবে, একটু ভরসা রাখা দরকার।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আজকের জনসভাতেও কিছু জন তাদের দাবি-দাওয়া সম্মিলিত প্ল্যাকার্ড তুলে ধরলে যথারীতি অসন্তুষ্ট হন তিনি। আজও ধমক দিয়ে তাদের বলেন, “প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে কোনো লাভ নেই। প্রতিটা সভাতেই দু-চারজনকে ঢুকিয়ে দিয়ে গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করছে। সভার কাজ সঠিকভাবে চালাতে দিন।” অন্যান্য সভার মতো আজকের বিশৃঙ্খলা অবশ্য খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি, কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী তার বক্তৃতা আবার শুরু করে দেন।