মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার এই দুটির সম্পর্কে জানেনা এমন লোক আছে বলে মনে হয় না। যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাদের কাছে মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার খুবই পরিচিত একটি বিষয়। তবে দুটির কাজ দুরকম হয় এবং দুটির কাজের ধরণও বেশ আলাদা। তবে চলুন দেখেনি কার কি বৈশিষ্ট্য, কার কি কাজ এবং দুটির মধ্যে পার্থক্য কি। তবে তার আগে জানতে হবে এই দুটি কি এবং এই দুটি কি কাজে ব্যাবহার হয়।

মাইক্রোসফট এজঃ

মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার
Microsoft

মাইক্রোসফট এজ হল একটি ওয়েব ব্রাউসার যা মাইক্রোসফটের দ্বারা নির্মিত। এই ব্রাউসার ইন্টারনেট পরিষেবা চালানোর কাজে ব্যাবহৃত হয়ে থাকে। মাইক্রোসফট এজ একটি উইন্ডোস টেন এর একটি আবশ্যক ব্রাউসার। মাইক্রোসফট এজ সাধারণত উইন্ডোস টেন এর সাথে দেওয়া থাকে এটি আলাদা করে ডাউনলোড বা ইনস্টল করতে হয় না। মাইক্রোসফট এজের প্রধান একটি বৈশিষ্ঠ্য হল এটি ব্যভার করা খুব সহজ প্রকৃতির হয়ে থাকে। মাইক্রোসফট এজ মাইক্রোসফট এর সুরক্ষা নিয়ে আসে।

গুগল ক্রোম ব্রাউজারঃ

মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার
TechnologyMirror

গুগল ক্রোম ব্রাউজার এটি গুগল এর তরফ থেকে নিজস্ব ব্রাউসার। এই ব্রাউসারেও কাজ করা বেশ সহজ। এটি গুগলের দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছে। এই ব্রাউজারটির নিজিস্ব কিছু বৈশিষ্ঠ্য রয়েছে। মাইক্রোসফট এজ যেমন মাইক্রোসফট এর সসুরক্ষা নিয়ে আসে ঠিক তেমনি গুগল ক্রোম ব্রাউজারও গুগলের সুরক্ষা নিয়ে আসে। আমরা জানি এই মুহূর্তে ইন্টারনেট পরিষেবায় বা যে কোনো পরিষেবায় গুগলের মাহাত্ম্য সর্বাধিক। ঠিক এই কারণেই গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর ব্যাবহার কিছু মাত্রায় বেশি হয়ে থাকে।

মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর মধ্যে পার্থক্যঃ

Untitled design 2
Lifewire

মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার ডিটির ব্যবহার এক কাজের জন্য হলেও মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেই পার্থক্য গুলির জন্য দুটির মধ্যে বেশ তফাৎ দেখতে পাওয়া যায়। সেই পার্থক্য গুলি হল-

১) মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার দুটির মধ্যে ডিসাইন এর বেশ পার্থক্য রয়েছে। যদিওবা দুটিই সার্চবার এর সাথেই আসে কিন্তু দুটির সার্চ ইঞ্জিন কিন্তু আলাদা। যেমন- মাইক্রোসফট এজ এর সার্চ ইঞ্জিন বিং পরিচালনা করে থাকে, ঠিক তেমনি গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর সার্চ ইঞ্জিন গুগল পরিচালনা করে থাকে। তাই একই রকম হয় সত্ত্বেও দুটির ডিসাইন যথেষ্ট আলাদা।

২) মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার দুটির কাজের তারতম্য অনুসারে দুটির পারফরম্যন্স যথেষ্ট প্ৰশংসনীয়। দুটি সমান তালে নিদের কাজ করে থাকে। যদিও বা কিছু ক্ষত্রে দেখতে পাওয়া যায় গুগল ক্রোম ব্রাউজার মাইক্রোসফট এজ এর থেকে যথেষ্ট দ্রুত গতিতে কাজ করে থাকে। কিন্তু বহু বিশেষজ্ঞ এটি মানতে নারাজ যে মাইক্রোসফট এজ গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে।

৩) দুটির কাজের প্রশংসা হলেও মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর মধ্যে প্রধান একটি পার্থক্য দেখতে পাওয়া যায়। সেটি হল রেম এর পার্থক্য। এক গবেষণায় প্রকাশিত যে মাইক্রোসফট এজ কাজ করতে যেখানে ৬৬৫ জিবি ব্যবহার করে থাকে, সেখানে গুগল ক্রোম ব্রাউজার ১.৪ জিবি রেম ব্যবহার করে থাকে। ঠিক এই কারণেই এই দুটির তফাৎ হয়ে থাকে।

৪) মাইক্রোসফট এজ দিন দিন নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসছে। এই বৈশিষ্ট গুলি মাইক্রোসফট এজকে বেশ আগের থেকে আরো উন্নত করে তুলেছে যার ফলে এজের কার্য্ক্রম দিন দিন বেড়েই চলেছে। গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর ক্ষত্রে নতুন নতুন আপডেট আসলেও গুগল ক্রোম ব্রাউজার নিজের ব্যবহ্রত মেমরি কোনো ভাবেই কমাতে সক্ষম হচ্ছে না।

৫) মাইক্রোসফট এজের সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং তথ্যের গোপনীয়তা গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর থেকে যথেষ্ট উন্নত এবং শক্তিশালী। গুগলের সুরক্ষা ব্যবস্থা ভালো হলেও মাইক্রোসফট এজ এর থেকে শক্তিশালী নয়। মাইক্রোসফট এজ বিভিন্ন রকম ভুল ভাল জায়গা থেকে আসা ট্র্যাকার্সদের আটকাতে গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর থেকে বেশি পরিমানে সক্ষম হয়ে থাকে। এছাড়াও আপনার গোপনীয় তথ্যের সুরক্ষা করা এবং সেটিকে কোথায় দেওয়া বা উচিত নয় সেই বিষয়েও মাইক্রোসফট এজ ভালো কাজ করে থাকে। অন্যদিকে অনেকসময় দেখতে পাওয়া যায় গুগল ক্রোম ব্রাউজার অন্য তৃতীয় পার্টির সঙ্গে আপনার গোপনীয় তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। তাই বড়ো বড়ো কোম্পানিগুলিতে মাইক্রোসফট এজ এর ব্যবহার বেশি দেখতে পাওয়া যায়।

৬) মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর আর একটি প্রধান বৈশিষ্ঠ হল। গুগল ক্রোম ব্রাউজার আইনড্রোইড হোক বা আইওস, উইন্ডোস হোক বা লিনাক্স যে কোনো ডিভাইস এ ব্যাবহার করা যেতে পারে। কিন্তু মাইক্রোসফট এজ উইন্ডোস টেন ছাড়া ব্যবহার করা অসম্ভব। যদিওবা এখন নতুন উপডেটের মাধ্যমে মাইক্রোসফট এজ অন্যান্য ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিন্তু গুগল ক্রোম ব্রাউজার এর মতো সহজে ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

তাহলে উপরিউক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে মাইক্রোসফট এজ বা গুগল ক্রোম ব্রাউজার দুটির কাজ এবং কাজের ধরন একই প্রকৃতির হলেও দুটির মধ্যে পার্থক্য কোনো অংশে কম নেই। কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন আপনি কোনটি ব্যবহার করেন এবং কেন।