নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০১৯ সালের ভোটে জঙ্গলমহলের ভোট বাক্সে তৃণমূল কংগ্রেসের মার্কশিট উজ্জ্বল ছিল না একেবারেই। মূলত ওই অঞ্চলের ভোটের উপর ভর করেই দেখা গিয়েছিল বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। আর সেসময় বহু চর্চিত এই জঙ্গলমহলের দায়িত্বে ছিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। উনিশের ভোটে পরাজয়ের পর তাই জঙ্গলমহল নিয়ে বেড়ে গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি।

অস্বস্তিকে অঙ্কুরেই বিনাশ করার জন্য তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জঙ্গলমহলের দায়িত্বে ফিরিয়ে ছিলেন পুরোনো সৈনিক শুভেন্দু অধিকারীকে। কিন্তু তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সম্ভবত সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে বাংলা। ঘাসফুল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলী রাজনীতির ঘুঘু নেতা, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী। যার কাছে একদিন ব্যর্থ হয়ে দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছিল,এখন সেই নাম লিখিয়েছে বিপক্ষ শিবিরে। একুশের ভোটের আগে তাই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে উঠে এসেছে শুভেন্দু অধিকারী বনাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অলিখিত দ্বৈরথ।

দলবদলের পর থেকেই এক নাগাড়ে মেদিনীপুরের প্রাক্তন ঘাসফুল নেতা যাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো তথা ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সভা মঞ্চ থেকে প্রকাশ্যে শুভেন্দু বাবুকে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি তৃণমূল নেতা। দুই হেভিওয়েট নেতার এই দ্বন্দ্ব যেন আলাদা মাত্রা যোগ করছে একুশের বিধানসভা ভোটের প্রাক-নির্বাচনী উত্তাপে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স এখন ৬৬ বছর। তাঁর পরবর্তীকালে আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের হাল ধরবে কে? উঠতে শুরু করেছে সেই প্রশ্ন। আর বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতির দিকে তাকালে এই বহু চর্চিত প্রশ্নের উত্তর হিসেবে প্রথমেই যাঁর নাম উঠে আসছে, তিনি অবশ্যই ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি দলের যুব সভাপতি হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। এমতাবস্থায়, অভিষেক-শুভেন্দুর নজিরবিহীন দ্বৈরথে শেষ হাসি হাসবে কে? সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।