নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রচারের আঙ্গিকে এবার যেন তৃণমূল-বিজেপিকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে বামেরা। টুম্পা সোনা, লুঙ্গি ডান্স এর মত বিখ্যাত বাংলা-হিন্দি গানের প্যারোডি বানিয়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়তেই তা তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। শুধুই প্যারোডি নয়, প্রচারের ক্ষেত্রে এবার সবদিক থেকেই এগিয়ে রয়েছে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস ও আইএসএফের এই জোট। নির্বাচনের ফলাফল কি হবে, তা জানা নেই। তবে নিজেদের চেষ্টায় কোনো খামতি রাখছেন না তাঁরা। কিন্তু আজ সকাল থেকে হঠাৎই বেশ চিন্তিত বাংলার বাম জনতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝরে পড়ছে উদ্বেগ। তাঁদের টেনশনের একটাই কারণ, ক্লাস এইটের ইতিহাস বইটার এবার কী হবে?
হঠাৎ ক্লাস এইটের ইতিহাস বই নিয়ে বামেদের মাথা ব্যথা! ব্যাপার কী? তলিয়ে দেখতে গিয়ে জানা গেল, মূলত সিঙ্গুর নিয়েই একটি পোস্টার হু হু করে ছড়াতে শুরু করেছে ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপে। তার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে এটাই, ক্লাস এইটের ইতিহাস বই নাকি ঘোর সঙ্কটে। ওই পোস্টারে লেখা হয়েছে – “ক্লাস এইটের ইতিহাস বইতে লেখা রয়েছে সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের নেতা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। সেই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বিজেপিতে যোগ দিয়ে বললেন সিঙ্গুর থেকে শিল্প তাড়িয়েছেন মমতা। তিনি শিল্প ফিরিয়ে আনবেন। রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বিজেপির প্রার্থী হলেন। সেই বিজেপি আবার কাল মিছিল করে বলল, সিঙ্গুর থেকে শিল্প তাড়ানোর কারিগর রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও।” এরপরেই গভীর উদ্বেগের সঙ্গে বামেরা এই প্রশ্ন তুলেছেন, “ক্লাস এইটের ইতিহাস বইটার এবার কী হবে?”
এই পোস্টার ছড়িয়ে পড়ার পর একেবারেই সন্দেহ নেই যে, এটি একটি আদ্যপান্ত শ্লেষে ভরা, ব্যাঙ্গাত্মক পোস্টার। সিঙ্গুরে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী করেছেন বেচারাম মান্নাকে। বেচারাম ছিলেন হরিপালের বিধায়ক। তাঁকে সিঙ্গুরে তুলে এনে তাঁর স্ত্রী করবী মান্নাকে হরিপালে টিকিট দেওয়া হয়েছে। আর মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বিজেপির প্রার্থী। অন্যদিকে সিপিএম এবার সিঙ্গুরে প্রার্থী করেছে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক ‘ইয়ং ব্লাড’ সৃজন ভট্টাচার্যকে।
গত লোকসভায় সিঙ্গুরে হাজার দশেক ভোটের লিড ছিল বিজেপির। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানের অন্যতম মাটিতেই ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার পর বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সে ভাবে জমিয়ে প্রচারই শুরু করতে পারেননি মাস্টারমশাই। যদিও বিজেপির নেতারা বলছেন, এই রকম হয়েই থাকে। ওটা কোনও ব্যাপার নয়। দু’একদিনের মধ্যেই প্রচারে ঝড় তুলবে বিজেপি। ওদিকে গাঁ গাঁ চষে বেড়াচ্ছেন সিপিএম ও তৃণমূল প্রার্থী। তার মধ্যেই তৃণমূল আর বিজেপিকে একসঙ্গে খোঁচা দিল বামেরা। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে সেখানে পাশা উল্টে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।